পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
একটি ভালো মানের পাজেরো গাড়ি কিনতে হলে অনেক যাচাই-বাছাই করে,অনেক কাগজপত্র রেডি করে এবং টাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করে তবেই চিন্তা-ভাবনা করে তারপর এই গাড়ি কিনতে হবে। তাই এই গাড়ি সম্পর্কে জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।
পেজ সূচিপত্রঃ পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
- পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
- পাজেরো গাড়ি কিনতে আপনার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা লাগবে
- ১ম পদক্ষেপ,বাজেট নির্ধারণ করা
- ২য় পদক্ষেপ, গাড়ির মডেল ও ধরন নির্বাচন করা
- ৩য় পদক্ষেপ, গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করা
- ৪র্থ পদক্ষেপ, ব্যবহৃত গাড়ির ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা
- ৫ম পদক্ষেপ, কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা
- ৬ষ্ঠ পদক্ষেপ,দাম নির্ধারণ করা
- ৭ম পদক্ষেপ,অর্থায়ন করা
- ৮ম পদক্ষেপ,মালিকানা হস্তান্তর করা
- লেখকের মন্তব্যঃ পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন এবার। বাংলাদেশে পাজেরো গাড়ির দাম মডেল কন্ডিশন এবং মডেলের বছরের উপর নির্ভর করে ভিন্নতা দেখা দিতে পারে এখানে একটি সাধারণ ধারণা দেওয়া হলোঃ
- পুরনো এবং ব্যবহৃত মডেলঃ পুরনো এবং ব্যবহৃত মডেল গুলোর দাম খুব কম সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকা থেকে শুরু হতে পারে। তবে এগুলো বেশ পুরনো এবং ব্যবহৃত কন্ডিশনের হয়ে থাকে বিধায় খুব বেশি টেকসই নাও হতে পারে।
- রিকন্ডিশনড বা উন্নত মানের ব্যবহৃত মডেলঃ প্রায় ২৫ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকার মধ্যে ভালো মানের রিকন্ডিশন হাজারো গাড়ি পাওয়া যেতে পারে। এগুলো স্বল্প বাজেটে রিকন্ডিশন বা উন্নত মানের ব্যবহৃত মডেল তাই আপনার পছন্দ হতে পারে।
- নতুন মডেলঃ সত্তর লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকার মধ্যে নতুন পাজেরো গাড়ির দাম হতে পারে।বিশেষ করে মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট এর নতুন মডেলের দাম ৬.৫১ মিলিয়ন টাকা থেকে ৮.৫৭ মিলিয়ন টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া সরকারিভাবে কেনা প্রগতির তৈরি মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্টস কিউএক্স জিপের প্রতিটির দাম ৯০ লাখ ৩১ হাজার টাকা।
বিক্রয় ডট কম বা বিভিন্ন গাড়ির ওয়েবসাইটগুলোতে বিভিন্ন মডেলের পাজেরো গাড়ির তালিকা এবং তাদের দাম দেখতে পারেন।
উদাহরণ হিসেবে কিছু তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
- মিতসুবিশি পাজেরো ২০০৮ মডেলের দাম ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে (কন্ডিশন এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে) ।
- মিতসুবিশি পাজেরো জি এল এস ভি-৯৩ সেভেন সিটার ২০২১ মডেলের দাম প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
- মিতসুবিশি পাজেরো স্পোর্ট ২.৫ এল সানরুফ ২০১৯ মডেলের দাম ৮৫ লাখ টাকা।
সবচেয়ে ভালো হবে, যদি আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বিভিন্ন বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করে সরাসরি গাড়ির কন্ডিশন দেখে দাম জেনে নেন এবং নিজে পছন্দ করেন।
পাজেরো গাড়ি কিনতে আপনার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা লাগবে
পাজেরো গাড়ি কিনতে আপনার কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা লাগবে প্রথমে তা জেনে নিন। হাজারো গাড়ি কিনতে চাইলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত। এটি একটি বড় বিনিয়োগ তাই তাড়াহুড়ো না করে ধাপে ধাপে আগানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে। প্রথমে গাড়ির বাজেট নির্ধারণ করতে হবে, গাড়ির মডেল নির্বাচন করতে হবে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছে নাকি নতুন তা যাচাই করতে হবে।
গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, গাড়ির মালিকদের সাথে কথা বলতে হবে এবং অনলাইন গবেষণা করতে হবে অর্থাৎ বিভিন্ন গাড়ির ওয়েবসাইট ফোরাম এবং রিভিউসাইট থেকে পাজেরোর বিভিন্ন মডেলের তথ্যকে সংগ্রহ করতে হবে, গাড়ির ফিটনেস চেক করে নিতে হবে, গাড়ির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে হবে, সবশেষে গাড়ি পছন্দ হলে অর্থায়নের মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে।
১ম পদক্ষেপ,বাজেট নির্ধারণ করা
১ম পদক্ষেপ,বাজেট নির্ধারণ করা বা পাজেরো গাড়ির দাম ঠিক করা।
- গাড়ির দামঃ প্রথমে আপনার বাজেট কত তা ঠিক করুন। আপনি ব্যবহৃত গাড়ি বা রিকন্ডিশন গাড়ি নাকি নতুন পাজেরো কিনবেন তার উপর দাম নির্ভর করবে।
- অন্যান্য খরচঃ গাড়ির দাম ছাড়াও রেজিস্ট্রেশন ফি টনেস ট্যাক্স টোকেন ইন্সুরেন্স সার্ভিসিং জ্বালানি এবং মেরামতের খরচের কথা মনে রাখুন। একটি গাড়ির মালিকানা ব্যয় বা কস্ট অফ ওনারশিপ শুধুমাত্র গাড়ির দামের উপর নির্ভর করে না তাই উপরোক্ত বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্য রাখুন।
২য় পদক্ষেপ,গাড়ির মডেল ও ধরন নির্বাচন করা
২য় পদক্ষেপ,গাড়ির মডেল ও ধরন নির্বাচন করা লাগবে।
- প্রয়োজনঃ আপনার জন্য কোনটি প্রয়োজন অর্থাৎ কি ধরনের পাজেরো দরকার যেমন-পারিবারিক ব্যবহার নাকি অফ-রোডিং নাকি ব্যবসার জন্য তা আগে নির্ধারণ করুন।
- মডেলঃ পাজেরো গাড়ির বিভিন্ন মডেল রয়েছে যেমন-পাজেরো স্পোর্টস,পাজেরো জি এস এল, মন্টেরো ইত্যাদি। প্রতিটি মডেলের বৈশিষ্ট্য সক্ষমতা এবং জ্বালানি দক্ষতা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই গাড়ির মডেল নির্বাচন করতে হবে আপনার যদি পছন্দ সেটি সম্পর্কে জেনে নিন।
- ব্যবহৃত গাড়ি নাকি নতুন গাড়িঃ ব্যবহৃত গাড়ি নাকি নতুন গাড়ি,আপনার বাজেট অনুযায়ী কোনটি প্রয়োজন,সে অনুযায়ী বিস্তারিত তথ্য জেনে নিন। নতুন গাড়ি কিনতে চাইলে প্রগতি (বাংলাদেশের মিতসুবিশি পাজেরো অ্যাসেম্বল করে) বা অনুমোদিত ডিলারের সাথে যোগাযোগ করুন। ব্যবহৃত গাড়ি কিনতে চাইলে ব্যক্তিগত বিক্রেতা ব্যবহৃত গাড়ির ডিলার বা অনলাইন মার্কেটপ্লেস ( যেমনঃ বিক্রয় ডট কম অথবা হাতিরঝিল ডট কম ইত্যাদি) দেখতে পারেন।
৩য় পদক্ষেপ গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করা
৩য় পদক্ষেপ গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করা। বিভিন্ন গাড়ির ওয়েবসাইট ফোরাম এবং রিভিউ সাইট থেকে এই গাড়ির বিভিন্ন মডেল সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করুন এবং অনলাইন গবেষণার মাধ্যমে এর ভালো মন্দ দিক সাধারণ সমস্যা এবং খুচরা যন্ত্রাংশের প্রাপ্যতা সম্পর্কে জেনে নিন। সম্ভব হলে মালিকদের সাথে কথা বলুন। আবার,যারা পেজেরো ব্যবহার করেন এমন পরিচিতদের সাথে কথা বলুন এবং তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চান। এতে আপনি উপকৃত হবেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
৪র্থ পদক্ষেপ,ব্যবহৃত গাড়ির ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা
৪র্থ পদক্ষেপ,ব্যবহৃত গাড়ির ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন। এক্ষেত্রে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিওর হবার চেষ্টা করুন যে,ব্যবহৃত গাড়িটি আপনার জন্য নিরাপদ কিনা।
- বিক্রেতা যাচাইঃ গাড়ি কেনার জন্য বিশ্বস্ত বিক্রেতা নির্বাচন করুন। ব্যক্তিগত বিক্রেতা হলে তার পরিচয় এবং গাড়ির মালিকানা যাচাই করুন।
- গাড়ির ইতিহাসঃ গাড়ির ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নিন,যেমন-গাড়ির সার্ভিস হিস্টোরি,আগের দুর্ঘটনার রেকর্ড (যদি থাকে) এবং মাইলেজ সম্পর্কে বিক্রেতাকে জিজ্ঞাসা করুন।
- গাড়ির ফিটনেস বা শারীরিক পরীক্ষাঃ গাড়ির ফিটনেস বা শারীরিক পরীক্ষা করুন।
- বাহিরের অংশঃবাহিরের অংশ বা গাড়ির বডি দেখুন। কোথাও রঙের পার্থক্য আছে কিনা দেখে নিন। কোথাও ডেণ্ট,স্ক্র্যাচ বা রঙের পার্থক্য আছে কিনা দেখে নিন। গাড়ির প্যানেলগুলি সমানভাবে লেগে আছে কিনা চেক করুন।
- ইঞ্জিনঃ গাড়ির ইঞ্জিন চালু করে দেখে নিন কোন অস্বাভাবিক শব্দ হচ্ছে কিনা। ইঞ্জিনের কম্পার্টমেন্টের তেল লিকেজ আছে কিনা বা মরিচা আছে কিনা চেক করুন।
- ভেতরের অংশঃ গাড়ির ভেতরের অংশ যেমন-সিট,ড্যাশবোর্ড,এসি,পাওয়ার উইন্ডো এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন।
- টায়ার ঃ গাড়ির টায়ারের অবস্থা এবং ট্রেডের গভীরতা পরীক্ষা করে দেখুন।
- মেকানিক দিয়ে পরীক্ষাঃ মেকানিক দিয়ে পরীক্ষা করে গাড়িটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নেয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মেকানিক গাড়ির ইঞ্জিন,সাসপেনশন,ব্রেক,ট্রান্সমিশন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে আপনাকে একটি সঠিক মূল্যায়ন দিতে পারবেন। এতে করে আপনি ভবিষ্যতের বড় খরচ থেকে বাঁচতে পারবেন এবং গাড়িটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবেন।
৫ম পদক্ষেপ,কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা
৫ম পদক্ষেপ,কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা লাগবে। গাড়ি কিনতে হলে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করে দেখতে হবে সেগুলো ঠিক আছে কিনা।
- রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ব্ল ু বুকঃ গাড়ির মালিকের নাম,চেসিস নাম্বার,ইঞ্জিন নাম্বার,মডেল এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ইত্যাদি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ব্ল ু বুকের সাথে মিলিয়ে নিন।
- ট্যাক্স,টোকেন ও ফিটনেসঃ ট্যাক্স, টোকেন ও ফিটনেস এগুলো মেয়াদ আছে কিনা এবং নিয়মিত আপডেট করা হয়েছে কিনা যাচাই করুন।
- বীমা বাইন্স ইন্সুরেন্সঃ বীমা বা ইন্সুরেন্সের মেয়াদ এবং ধরন পরীক্ষা করুন।
- অন্যান্য কাগজপত্রঃ অন্যান্য কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে সার্ভিস হিস্টরি,কেনাবেচার রশিদ ইত্যাদি যদি থাকে চেক করে নিন।
৬ষ্ঠ পদক্ষেপ,দাম নির্ধারণ করা
৬ষ্ঠ পদক্ষেপ,দাম নির্ধারণ করা লাগবে। বাজারের বর্তমান মূল্য এবং গাড়ির কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে দর কষাঘষি করে দাম নির্ধারণ করুন। মেকানিক্যাল অনুযায়ী কোন সমস্যা থাকলে সেটি উল্লেখ করে দাম কমাতে চাইতে পারেন।
৭ম পদক্ষেপ,অর্থায়ন করা
৭ম পদক্ষেপ,অর্থায়ন করা লাগবে। যদি সম্ভব হয় নগদ টাকায় গাড়ি কেনা সবচেয়ে ভালো। আর যদি নগদ টাকা না থাকে,তবে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে বিভিন্ন ব্যাংকের গাড়ির লোনের সুদের হার এবং শর্তাবলির যাচাই করুন। তবে ক্ষেত্রে,নগদ টাকায় গাড়ি কেনা উত্তম।
৮ম পদক্ষেপ,মালিকানা হস্তান্তর করা
৮ম পদক্ষেপ,মালিকানা হস্তান্তর করা লাগবে। মালিকানা হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে দুইটি প্রক্রিয়া রয়েছে।
- বিআরটিএ প্রক্রিয়াঃ গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন একটা আইনি প্রক্রিয়া। তে উপস্থিত থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ ও নথি প্রদান করতে হবে।
- বিক্রয় চুক্তিঃ একটি লিখিত বিক্রয় চুক্তি তৈরি করুন,যেখানে গাড়ির বিবরণ বিক্রয় মূল্য এবং উভয়পক্ষের শর্তাবলী উল্লেখ করা থাকবে। সেক্ষেত্রে সাক্ষী রাখা ভালো,যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।
লেখকের মন্তব্যঃ পাজেরো গাড়ির দাম কতো বিস্তারিত জানুন
hiramonsdream er নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url