পিপুল এর ভেষজ উপকারিতা
আশ্চর্য গুণের অধিকারী পিপুল গাছ ভেষজ গুণে গুণান্বিত তাই একে মেডিসিনাল প্ল্যান্ট বলা হয়। পিপুল সুগন্ধি যুক্ত একটি লতানো গাছ। এর পাতা দেখতে অনেকটা পান পাতার মতো। পাতা লম্বায়৪-৬সেন্টিমিটার এবং চওড়ায় ২-৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে।
পাতার উপরিভাগ গাঢ় সবুজ রঙের এবং নিচের দিকটা হালকা সবুজ হয়ে থাকে। প্রতিটি পর্ব ৭-১৩ সেন্টিমিটার লম্বা হতে দেখা যায়।বাংলাদেশে এটাকে আঞ্চলিক ভাষায় পিপুল শাক বলা হয়। কুড়িয়ে পাওয়া বা অচাষকৃত শাকও বলে অনেকে।
প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে খোলা অথবা বদ্ধ জায়গায় জন্মে এটি। লতা জাতীয় উদ্ভিদ তাই পরনির্ভরশীল হয়ে বিস্তার লাভ করে থাকে। বর্ষা মৌসুমে এটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। পিপুল নানা ধরনের ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ একটি শাক। এটি শরীরের জন্য খুবই উপকারি। এই শাক রান্না করে খাওয়া যায়। কেউ আবার এটি ব্যবহার করে এন্টিবায়োটিক হিসেবে। দেশ-বিদেশে এর চাহিদাও ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিপুল ফল বেশ কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান প্রতি কেজি ১৪০০ টাকা দরে কিনে থাকে। ভারত ও নেপালে মসলা হিসেবে পিপুলের ব্যবহার দেখা যায়। বিশেষ করে আচার ও চাটনি তৈরিতে পিপুল চূর্ণ মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পিপুল গাছের উপকারিতা
পিপলের মূলও পিপুলের ন্যায় গুণ কারক । পিপুল চূর্ণ মধুসহ সেবনে মেদরোগ,কফ,শ্বাসকষ্ট,কাশি ও জ্বর নিবারণ হয় এবং বল,মেধা ও ক্ষুধা বর্ধিত হয়। আখের গুড় ২ভাগ এবং পিপুল ১ভাগ নিয়ে মিশ্রিত করে নিয়মিত সেবন করলে জ্বর,অগ্নিমান্দ্য,কাশি,অজীর্ণ, অরুচি,শ্বাসকষ্ট,হৃদরোগ এবং কৃমি ভালো হয়।
ফুসফুসের ক্যান্সার ব্রেস্ট ক্যান্সার আন্ত্রিক ক্যান্সার লিউকোমিয়া মস্তিষ্কে টিউমার ইত্যাদি রোগের বিরুদ্ধে বিপুল বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।
হৃদরোগের সেবুন বিধিঃ সমপরিমাণ পিপুলের শিকড় এবং দারুচিনি একসাথে বেটে মিহি গুড়া করতে হবে। তারপর এটি ঘি এর সাথে মিশিয়ে রোজ দুইবার খেতে হবে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য ও হৃদরোগের উপশম হয়।
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টে সেবন বিধিঃ যাদের হাঁপানের কষ্ট হয় তাদের উচিত খাওয়ার পর২৫০ মেলে পানিসহ পিপুল গুঁড়া খাওয়া। এতে হজমে ভালো হবে এবং হাঁপানির কষ্ট লাঘব হবে।
হাসির সাথে যদি জ্বর থাকে, তবে ক্ষয় রোগের আশঙ্কা করা হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ চিকিৎসা শুরু করার আগ.২৫০ মিলিগ্রাম পিপুল গুঁড়া কুসুম গরম পানি সহ সকাল বিকাল খেলে৪/৫ দিনের মধ্যেই উপকার পাওয়া যাবে।
যারা অতিরিক্ত মোটা,তারা মেদ কমাতে চাইলে রোজ খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর ১কাপ গরম পানিতে ২৫০মিলিগ্রাম পিপল শর্মা ভুলে তাতে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে খাবেন। এভাবে দিনে দুইবার করে একটানা ১০-১৫দিন খেলে মেদ কমবে আশা করা যায়।
যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন,বাতরোগে যখন শরীর স্থবির হয়ে যায় তখন ২৫০ মিলিগ্রাম পিপুল চূর্ণ এবং ১ চামচ আদার রস গরম করে সকাল বিকাল দুইবার খেলে এটি উপশম হবে।
শিশু এবং বৃদ্ধ যাদের কৃমি আছে তাদের উচিত রোজ সকাল-বিকেল ১ কাপ বাসি পানিতে ২৫০ মিলিগ্রাম পিপুল চূর্ণ গুলে পান করা। এটি সেবনে কৃমির উপদ্রব কমবে।
অল্প পরিশ্রমে যাদের শ্বাসকষ্ট হয়,তারা খাবার গ্রহনের কিছুক্ষণ পরে পিপুল চূর্ণ ২৫০ মিলিলিটার সামান্য ১ কাপ পানিতে গুলে সেবন করতে পারেন। অথবা ২ গ্রাম পিপুল ফল একটু থেঁতো করে নিয়ে ৪ কাপ পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ২-৩ ঘণ্টা পরপর ঐ পানি ৩-৪ বারে খেতে পারেন। এতে শ্বাসকষ্ট কমে যাবে। এসব পদ্ধতি ব্যবহারে অনেকটা সুফল পাওয়া যাবে। তবুও এ সকল চিকিৎসা করার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
hiramonsdream er নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url