পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এই আর্টিকেলে। পটলের গুনাগুণ জেনে এই সবজিটি তরকারি হিসেবে খেলে উপকার পাবেন। আবার, এর অপকারিতা জানলে ক্ষতি থেকে রেহাই পাবেন।

পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
তাহলে আসুন এই সবজিটির উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে তার সঠিক ব্যবহার করে আমরা উপকৃত হই। পটল আমরা প্রায় সবাই চিনি। অনেকেই খেতে পছন্দ করি,আবার অনেকে খেতে পছন্দ করি না।ছোট্ট এই সবজির অনেক গুণাগুণ রয়েছে। 

পেজ সূচিপত্রঃপটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন 

পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন   

পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এখন। আমরা যে পটল খায় তা সাধারণত দুই ধরনের। একটি হলো তেতো পটল এবং আরেকটি হলো বাজারে সচরাচর পাওয়া যায় সেই সুমিষ্ট পটল। বাজারে যে পটল পাওয়া যায় সেই পটল বেশি জনপ্রিয়। পিত্ত থেকে যে জ্বর হয়,সাধারণ জ্বর, পিলের অসুখ,উদরাময়,বাত, হাত-পা ফুলে ওঠা ইত্যাদি অসুখে পটল খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

এসব অসুখে পটল খেলে পেট পরিষ্কার হয়ে গিয়ে পাচনশক্তি বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ হজম শক্তির উন্নতি হয়।  উত্তম পথ্য হিসেবে কাজ করে। এটি কৃমি রোগের পক্ষে অত্যন্ত উপকারি। এটি শরীরের বল ও কামশক্তি বর্ধনকারী। এটি চোখের জন্য খুব উপকারি। 

পটলের উপকারিতা

পটলের উপকারিতা বা পটলের গুণাগুণের শেষ নেই। পটল খেলে শোথ রোগে অর্থাৎ দেহে পানি জমার জন্যে শরীর ফোলা রোগে বা ড্রপসি রোগে খুব উপকারি।

পটলের উপকারিতাগুলো সম্পর্কে লেখা হলোঃ 

  • পটলের তরকারি খেলে হজম করার ক্ষমতা বেড়ে যায়।
  • কাশি জ্বর রক্তের দোষ অর্থাৎ রক্ত বিকার সারে।
  • অসুস্থ ব্যক্তিদের পক্ষে পটলের ঝোল,জুস বা স্যুপ,তরকারি বা পটল পোড়ার ভর্তা ভাতের সাথে খেলে রুচিকারক এবং বলবর্ধক হিসেবে খুবই উপকারী। বিশেষ করে শুদ্ধ ঘি দিয়ে সাঁতলানো পটলের তরকারি খুবই উপকারী। 
  • তেতো পটলের ক্বাথ খেলে শরীরের বিষ নেমে যায়।
  • এই তেঁতো পটলের রস মাথায় লাগালে টাক পড়া বন্ধ হয় এবং মাথায় নতুন চুল গজায়।
  • ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিংড়ে তেঁতো রস বের করে নিয়ে করলার মতো তরকারি রান্না করা যায়। এভাবে রান্না করা তরকারি খেলে জ্বর সেরে যায় অর্থাৎ তেঁতো পটল জ্বরনাশক। তেঁতো পটলের পলতা পাতারও এই গুণ আছে। 
  • পটলের গুনাগুন অনেক। সাধারণত পটল সহজে হজম হয় এবং অন্য খাবার হজমে সাহায্য করে। হার্টের পক্ষে ভালো, লঘুপাক, ক্ষুধা বাড়ায়, শরীর স্নিগ্ধ করে অথচ গরম লাগা,কাশি, রক্ত বিকারগ্রস্ত রোগ,শ্লেষ্মা,বাত,পিত্ত,জ্বর ও কৃমি সারিয়ে তোলে।
  • তেতো পটল গরম হলেও রক্তবিত্ত অর্থাৎ পিত্তের রোগ বায়ু গফ কাশি চুলকানি কুষ্ঠ রোগ রক্তবেখার অর্থাৎ রক্তের দোষ জ্বর ও শরীর জ্বালাপোড়া সারায়। এসব রোগে তেতো পটলের শাঁস শুকিয়ে গুড়ো করে একটু এলাচ দারচিনি ও লবঙ্গের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। 
  • পটল লতার মূল জোলাপ দেওয়ার কাজে লাগে। লতার ডাঁটাও কফ নাশক। পলতা পাতা পিত্তের রোগ সারায়। 
  • পটলের ফুল ত্রিদোষ নাশক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ পটলের ফুল বাত,কফ ও পিত্ত নাশক হিসেবে সহায়ক।  
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে পটল
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে পটল । পটল খেলে জ্বর-সর্দি কাশির হাত থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাওয়া যায়।  

পটলের অপকারিতা

পটলের অপকারিতা আছে তবে তা খুবই সামান্য। পটল খেলে যাদের এলার্জির প্রবলেম হয় তাদের পটল না খাওয়াই উত্তম। এছাড়াও যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেক কম থাকে তাদের পটল না খাওয়াই ভালো। কারণ পটল খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি কমে যেতে পারে তাহলে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।  

ব্যথা নাশক হিসেবে পটলের ব্যবহার

ব্যথা নাশক হিসেবে পটলের ব্যবহার দেখা যায়। নিয়মিত পটলের তরকারি খেলে এটি দেখানো আসুক হিসেবে কাজ করে।

কৃমিনাশক হিসেবে পটলের ব্যবহার

কৃমিনাশক হিসেবে পটলের ব্যবহার করা হয়। ১০ গ্রাম ওজনের তেতো পটল বা পলতা এবং ১০ গ্রাম ধনে রাতের বেলা এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন,সকাল বেলায় সেই পানি ছেকে নিয়ে মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার খান তাহলে সমস্ত কৃমি ধ্বংস হবে,ইনশাআল্লাহ।  

ডায়াবেটিস রোগ সারাতে পটলের ব্যবহার

ডায়াবেটিস রোগ সারাতে পটলের ব্যবহার করা হয়। যে সকল মানুষের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা পটল খেলে খুব উপকার পাবেন। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে,পটলের মধ্যে আছে অ্যান্টি হাইপার গ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্যটি রক্তে গ্ল ুকোজের বা শর্করার মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে থাকে। 

হজম ক্রিয়া  স্বাভাবিক করতে পটলের ব্যবহার

হজম ক্রিয়া  স্বাভাবিক করতে পটলের ব্যবহার করা হয়। পটল খাওয়ার ফলে আমাদের ক্ষুধা পাড়ে এবং হজম প্রক্রিয়া খুব উন্নত হয়। 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে পটলের ব্যবহার

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে পটলের ব্যবহার করা যায়। পটলের বীজ এমন একটি স্বাস্থ্যকর বীজ যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এবং মল নির্গমনে সাহায্য করে থাকে।

ওজন কমাতে পটলের ব্যবহার

ওজন কমাতে পটলের ব্যবহার করা যায়। যারা ওজন বৃদ্ধির সমস্যায় ভুগছেন তারা যদি পটল খান তাহলে উপকার পাবেন।

রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে পটল

রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে পটলের ব্যবহার করা হয়। পটল আমাদের রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং এর সাথে সম্পর্কিত অনেক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে থাকে। 

অ্যান্টি এজিং হিসেবে পটল

অ্যান্টি এজিং হিসেবে পটলের ব্যবহার করা হয়। পটলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে। এটিই মুখের দাগ ও বলিরেখা দূর করতে সহায়ক।  

জন্ডিস এবং লিভার ফাংশন ভালো রাখতে পটল

জন্ডিস এবং লিভার ফাংশন ভালো রাখতে পটল খাবেন। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে,পটলের পাতা ও ফলের নির্যাস অনেক সমস্যার সাথে সাথে জন্ডিস রোগের উপশম করতে এবং লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। জন্ডিস এবং লিভার ফাংশন ভালো রাখতে নিয়মিত পটল খেলে উপকার পাওয়া যায়। 

আলসার প্রতিরোধী প্রভাব আছে পটলে

আলসার প্রতিরোধী প্রভাব আছে পটলে। পটলের মধ্যে থাকা আলসার প্রতিরোধী প্রভাব যা পাকস্থলীকে আলসার থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে থাকে। 

কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় পটল

যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তারা পটল খেলে কিছুটা সমস্যা দূর করতে পারবেন। কারণ অটল আমাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে থাকে। 

মদ্যপানে আসক্ত ব্যক্তিদের মানসিক ও  শারীরিক সমস্যা দূরীকরণে পটল

মদ্যপানে আসক্ত ব্যক্তিদের মানসিক ও  শারীরিক সমস্যা দূরীকরণে পটল ব্যবহৃত হয়।  মদ্যপানে আসক্ত সেই সব ব্যক্তিদের অনেক ধরনের মানসিক ও  শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে,যা পটল খেলে এ ধরনের সমস্যা কাটাতে এটি অনেক ভালো কাজ করে থাকে।  

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে পটল

মুখের দুর্গন্ধ দূর করে পটল। যাদের মুখে দুর্গন্ধ হয় তারা পটল খেলে এ দুর্গন্ধ থেকে কিছুটা নিরাময় পেতে পারেন।  কারণ পটল খেলে তা  মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে।

লেখকের শেষ মন্তব্যঃপটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

পটলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং উপকার পান এই উদ্দেশ্যেই এই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। পটলের অনেক উপকারিতা আছে, এগুলো জেনে আপনি যেন উপকৃত হতে পারেন এবং পটলের অপকারিতা গুলো জেনে সাবধান হতে পারেন এই লক্ষ্যে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। পটলের পাতা,পটলের বীজ এবং পটলের ব্যবহার করে আমরা উপকার পেতে পারি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার করতে ভুলবেন না।     

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

hiramonsdream er নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url